নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এ মাসের শুরুর দিকেই মৃত্যুর তালিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা রোগী বেশি থাকলে বর্তমান চিত্র ভিন্ন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের চেয়েও এখন রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি ভীতিকর। প্রতিদিন ভর্তি তালিকাতে বেশি থাকছে রাজশাহীর রোগী। আবার বেশি মৃত্যুর তালিকাতেও বেশি রাজশাহীর বাসিন্দা।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে শুরু করে রোববার সকাল পর্যন্ত রামেকের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
তিনি জানান, রামেকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে ১৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এক হাজার ৫২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬৮ জন করোনা পজিটিভি। যা আগের তুলনায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়িয়ে করোনার নতুন হটস্পট রাজশাহী।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজশাহীতে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় এক হাজার ৫২৬ জনের। এরমধ্যে আরটিপিসিআর মেশিনে ৩৪১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ১৮৩ জন।
অন্যদিকে, রাজশাহীর ৯ উপজেলায় মোট ৯০৭ জনের র্যাপিড অ্যান্টেজেন টেস্টে শনাক্ত হন ২৩৬ জন। এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) থেকে ১০৩ জনকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করে ৬০ জন শনাক্ত হয়েছেন। আবার জিন এক্সপার্ট টেস্ট করা হয় ৪২ জনের, এতে শনাক্ত হন ২২ জন।
রাজশাহীতে প্রতিনিয়ত করোনার সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়া চরম উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার।
তিনি বলেন, প্রকোপ দেখে মনে হচ্ছে সামাজিক সংক্রমণ হচ্ছে। যেহেতু সীমান্ত এলাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ৮০ ভাগ উপস্থিতি পেয়েছে, সে হিসেবে ধারণা করা যায় রাজশাহীতেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লকডাউনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণের হার কমলেও বেড়েছে রাজশাহীতে। আর রাজশাহীর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মহানগরীর লক্ষীপুর। এ এলাকায় করোনার রোগী ও তাদের স্বজনদের অবাধ চলাচলের কারণেই সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানি বলেন, রোগীদের বেড দেয়া যাচ্ছে না। এরপর চেষ্টা চলছে। নতুন করে একটি ওয়ার্ড বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও তিনটি ওয়ার্ড বাড়ানোর কাজ চলছে। তবে রামেকের বাইরে যতদ্রুত সম্ভব করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ জরুরি। অন্যথায়, সাধারণ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও ঝুঁকিতে পড়বেন।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.